আমাদের পাহাড়ি কুমারী ললনারা গর্ভবতী হচ্ছে অহরহ ভান্তেদের লীলায় ! - SohojSite Media Zone

New+Image+-+Copy

অনলাইন মিডিয়া জোন

Recent Tube

demo-image

Home Top Ad

Responsive Ads Here

Post Top Ad

Friday, July 14, 2017

demo-image

আমাদের পাহাড়ি কুমারী ললনারা গর্ভবতী হচ্ছে অহরহ ভান্তেদের লীলায় !

Responsive Ads Here
4444..

নাটোরের বনলতা সেন

পৃথিবীর সব মানুষকে সকালবেলা ঘুম থেকে জাগাতে বোধহয় এই একটা লোভই দেখানো হয়, ‘আরলি টু রাইজ এন্ড আরলি টু বেড, মেকস অ্যা ম্যান
আমাকেও এমন জ্ঞান দিচ্ছিলেন আমার এক আত্মীয়, বড় ভাই।
আমি প্রতিবাদ করলাম, এটা কোনও কথা না। ঘুমই আসল জিনিস। মাথা ঠাণ্ডা রাখে। চিন্তা করার জন্য মস্তিষ্ককে প্রস্তুত করে। আর ঘুম যদি মানুষকে জ্ঞানী বানাত, তবে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি জ্ঞানী হত বাংলাদেশের লোকাল বাসের ড্রাইভার, হেলপার, কন্ডাক্টররা। কারণ তাদের আগে কেউ ঘুম থেকে ওঠে না।
ঘুমের পক্ষে এত এত প্যাঁচাল সহ্য করতে না পেরে এবার তিনি সরাসরি বললেন, নাটোর যেতে চাইলে সকালে উঠিস।
বনলতা সেনের নাটোর দেখতে আগ্রহ আমার ব্যাপক। কিন্তু সকালে ওঠার কথা শুনে তা নিমিষেই শেষ হয়ে গেল। তবে হঠাৎ মাথায় একটা চ্যালেঞ্জ দানা বাঁধল। ঘুমের কাছে বনলতা হেরে যাবে?
না তা হতে দেওয়া যাবে না। জীবনবাবুর মুখের দিকে তাকিয়ে হলেও আমাকে সকালে উঠতে হবে। আমি রাজি হলাম। ওকে। যাব।
২.
খুব ভোরেই উঠতে হল। সাধারণ বা অসাধারণ কোনও ক্ষমা আমার জন্য বরাদ্দ ছিল না। কারণ তার বেলা ১টার মধ্যে নাটোর পৌঁছাতে হবে। সেখানে তার কাজ আছে।
তো যেই কথা সেই কাজ। অনেক রাতে ঘুমানো মানুষদের ভোরে ঘুম থেকে ওঠার বিপদ অনেক। সবচেয়ে বড় বিপদ অনেকক্ষণ ধরে নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় না। উল্লেখ্য, এই নেটওয়ার্ক মোবাইলের না, নিজেরই। ঘুম থেকে জেগে ওঠার পর অনেক সময় লাগে বুঝতে, যে কী হচ্ছে? আমি কী জেগে উঠেছি? না ঘুমাচ্ছি?
যাই হোক, সব সমস্যা করে ঘুম থেকে উঠলাম এবং বনলতার শহরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিলাম। প্রাথমিক গন্তব্য মহাখালী বাসস্ট্যান্ড।
ঘুম-ঘুম ভাব নিয়ে পৌঁছলাম মহাখালী বাসস্ট্যান্ড। সেখানে ভোরকে আর ভোর মনে হল না। মনে হল, দুপুর হয়ে গেছে। আর মনে হল দুনিয়ার সব মানুষ যেন উত্তরবঙ্গে যাচ্ছে। এত ভিড়, মহাখালি মহা ভিড়ে পরিণত।
তার সাথে প্রচুর বাস সার্ভিস। যেগুলো শুনে ধোঁকা খেতে হয়। যেমন কিছুক্ষণ পরপর কাউন্টার থেকে চিৎকার, এই হানিফ আইসা গ্যাছে। ওই মামুন আইসা গ্যাছে। আলম চইলা আসলো।
এগুলো যে বাস সার্ভিসের নাম তা না জানা থাকলে রাস্তার দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে, দেখি কে এল। তবে এগুলো কম-বেশি সব জানা থাকায় কেউ পথের দিকে তাকায় না। পথ ধরে পা বাড়ায়। বাস এসে গেছে।
আমরাও কোনও এক ব্যক্তি নামধারী বাসসাভির্সের টিকিট কেটে উঠে বসলাম। বসলাম মানে বসা না। সিটা বাঁকাটাকা করে অসম্পূর্ণ ঘুম সম্পাদনের চেষ্টায় রত হলাম। কিন্তু খুব বেশি সফল হলাম না। কোথাও ঘুরতে গেলে আমি ঘণ্টার পর ঘণ্টা বাইরে তাকিয়ে থাকতে পারি। ভালো লাগে। আমার কাছে দেখার চেয়ে বড় কিছু নেই।
দেখতে দেখতে চলে এলাম প্রায় সিরাজগঞ্জ। মোটমুটি অর্ধেক পথ। কারণ, খাবারের জন্য বিরতি। আমরাও নেমে গেলাম। ক্ষুধা লাগুক আর না লাগুক হোটেল দেখলে ক্ষুধাকে আর রোখে কে?
খাওয়া-দাওয়ার পর আবার আমাদের যাত্রা শুরু। আবার শুরু দেখাদেখি।
৩.
নাটোরে আমরা যে জায়গাটাতে নামলাম, তার নাম বনপাড়া। আমরা সেখানে নেমে উঠলাম, হেলিকপ্টার নামের এক বাহনে। শ্যালোইঞ্জিনে চালিত গাড়ি। সেটা ছাড়া বিকল্প যানও খুঁজে পাওয়া গেল না। মানুষ নিজের ক্ষমতার চেয়ে বেশি কথা বলে ফেললে সেটাকে বলা হয়, ছোট মুখে বড় কথা। এই যানটাকেও আমার তেমনই লাগল। শব্দের তুলনায় গতি অনেক কম। আওয়াজ বেশি, গতি কম। সেই যে হেলিকপ্টার চলা শুরু করল আমাদের নিয়ে। চলছে তো চলছেই। থামার নাম-গন্ধ নেই। অনেকক্ষণ পরপর যেন একটু আগাই। সে এক বিরাট জার্নি। তিন কিলোমিটার যেতেই দুপুর বানিয়ে দিল। সে বাহনে উঠলে মনে করার উপরে চলতে হয়। যে স্টেশনেই আসুক না কেন মনে করতে হবে এর পরেরটাই আমাদের। না হয় বিরক্তির সীমা থাকবে না। আমরাও আমাদের বিরক্তি আর সহ্যের শেষ সীমারও দুই স্টেশন পরে গিয়ে নামলাম। উলে¬খ্য, আমার আত্মীয় রিটায়ার্ড আর্মি পারসন হওয়ার সূত্রে তার কাজ ছিল নাটোরের দয়ারামপুর ক্যান্টনমেন্টে। সেটা ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের দফতর। তার কাজ শেষে আমরা ক্যান্টনমেন্টের ভেতরে ঘুরে দেখলাম। অসম্ভব সুন্দর সব সাজনো-গোছানো পরিবেশ। পুরনো কিছু বাড়িকে বেশ সুন্দরভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়েছে এখানে। বিশাল এলাকা নিয়ে এই জায়গাটা বেশ দৃষ্টিনন্দন।
সেখান ঘুরে দেখে আমরা চলে গেলাম নাটোর শহরে। যেতে আবারও সেই বাহন মাটিতে হামাগুড়ি দিয়ে চলা হেলিকপ্টার। আবারও সেই আকাশ-বাতাস কাঁপানো শব্দ। আবারও সেই স্বল্প গতি। অবশেষে একটা সময় গিয়ে পৌঁছলাম মূল শহরের কাছাকাছি। এবার নিতে হবে রিকশা। সারি সারি সাজানো রিকশার সামনে গিয়ে একজনকে জিজ্ঞাসা করলাম, যাবে কিনা?
সে সানন্দে রাজি হল। আমরাও উঠে বসলাম। তবে আমার কেন যেন রিকশাওয়ালকে চেনা চেনা লাগছে। কিন্তু কিছুতেই মনে করতে পারছি না কে সে?
যাই হোক, তার কথা চিন্তা করা থেকে নিজেকে বিরত রেখে বনলতা সেনকে খোঁজার চেষ্টা রত হলাম। তবে বনলতা সেনকে তো আর পাওয়া যাবে না। তার উত্তর প্রজš§কে খোঁজার চেষ্টায় মনোনিবেশ করলাম। রিকশার পাশ দিয়ে যেই যায়। মনে হয়, সে-ই বনলতা সেন-এর মেয়ে। বনলতা সেন-এর নাতি। মাঝে মাঝে ইচ্ছেও করছিল জিজ্ঞাসা করে ফেলি, আচ্ছা আপনার নানুর নাম কী? এসব ভাবতে ভাবতে অনেক কিছুই দেখা হল। ভালো লাগল, রাজবাড়ি। বাইরে থেকে খুবই সুন্দর। সময় না থাকায় ভেতরে যাওয়া হয়নি।
ছোট শহর নাটোর ঘণ্টাখানেকের মধ্যে অনেকটুকু দেখা হয়ে গেল। এবার চলে যেতে হবে। কিন্তু তার আগে খাওয়া-দাওয়া করা খুবই প্রয়োজন। হোটেলে গিয়ে মজার জিনিস পেলাম। খাবার মেন্যু হিসেবে ওয়েটার জানাল অনেক কিছুর কথা। মন আটকে গেল কোয়েল পাখিতে। অর্ডারও দিয়ে দিলাম। দিয়েই মনের ভেতর ঝামেলা শুরু হল আমার বড় ভাইয়ের। কোয়েল পাখি ছোট। এর এত দাম! আর এক প্লেটে কয় পিস থাকে কে জানে? কিন্তু পরে যা জানলাম, তা ভালোই। পুরো পাখিই রান্না করে এনেছে। দুই পিস পাখি। এবার মনে হল, দাম এত কম কেন?
যাই হোক কম দামে ভালো অভিজ্ঞতা নিয়ে পা বাড়ালাম বাসের পথে। বাসে ওঠার আগে, বাধ সাধলো এক হকার। নাটোরে এসেছেন আর কাঁচাগোল্লা নিয়ে যাবেন না?
আমরা একসঙ্গে জিভে কামড় দিয়ে উঠলাম, তাই তো। কাঁচাগোল্লা বিক্রেতার মহানুভবতায় মুগ্ধ হয়ে তার কাছ থেকে অনেক বেশি দামেই কাঁচাগোল্লা কিনে ফেললাম।
সব হলেও একটা জিনিস আর হল না। বনলতা সেন বা তার পরবর্তী কাউকেই না দেখে রওনা দিতে হল। মনে এক চাপা অস্বস্তি নিয়ে এগিয়ে চললাম, ঢাকার পথে। বাস চলছে। আর বাসে চলছে টিভি। জনপ্রিয় সঙ্গীত প্রতিযোগিতার অনুষ্ঠান ইন্ডিয়ান আইডলের সিডি দেখানো হচ্ছে। আমিও আর কিছু দেখার না পেয়ে এবং বনলতা সেনকে দেখার অতৃপ্তি কাটাতে তা দেখা শুরু করলাম। হঠাৎ এক শিল্পীকে দেখে চমকে উঠলাম। ঘটনা কী একে যেন কোথায় দেখে এলাম। হঠাৎ মনে পড়ল, আরে এর চেহারা তো সেই রিকশাওয়ালার মতো।

No comments:

Post a Comment

Post Bottom Ad

Pages

Contact Form

Name

Email *

Message *